Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ-রাশিয়া ঋণচুক্তি সই আজ

প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাখাওয়াত হোসেন বাদশা : বহুল প্রত্যাশিত ও আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার সাথে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। এই চুক্তির মধ্য দিয়েই রাশিয়া পারমাণবিক প্রকল্পটি নির্মাণে বাংলাদেশকে ৯০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ সহায়তা দেবে।
চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাশিয়া গেছেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এই চুক্তি সই হবে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ সহায়তা, যা এক বছরের বাজেটের তিন ভাগের এক ভাগের সমান। গতকাল (সোমবার) বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় সূত্র এ কথা জানায়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার বা ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়সাপেক্ষ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়া ৯০ শতাংশ, অর্থাৎ ১ হাজার ১৩৮ দশমিক ৫ কোটি ডলার ঋণ দেবে। এই প্রকল্পের কারিগরি সহায়তা ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে রাশিয়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এই প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে ঋণ নেয়ার ১০ বছর পর সুদ শুরু হবে। ৩০ বছরের মধ্যে ঋণের সম্পূর্ণ টাকা বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে। মূল ঋণের প্রথম কিস্তি ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ পাওয়া যাবে। প্রতি বছরের ১৫ মার্চ ও ১৫ সেপ্টেম্বর সমপরিমাণ কিস্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ শোধ করতে হবে। লাইবরের সাথে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদের হার নির্ধারিত হবে। তবে চুক্তির শর্ত মোতাবেক রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া ঋণের সুদের হার কোনোভাবেই বছরে চার শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
এর আগে এই পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রের প্রাথমিক বিভিন্ন কাজ করার জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ নেয়া হয়েছিল রাশিয়ার কাছ থেকে।
রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নিয়ে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রকল্পের মূল চুক্তি (জেনারেল কন্ট্রাক্ট) সই হয়। চলতি বছরের ১৭ মে রাশিয়ার মস্কোতে দুই পক্ষ চুক্তিটি অনুস্বাক্ষর করে। এরপর বাংলাদেশ সরকার অনুস্বাক্ষরিত এই চুক্তি অনুমোদন করে গত ২৭ জুন। এরপর অনুস্বাক্ষরিত চুক্তিটি ১৮ জুলাই অনুমোদন করেছে রাশিয়া সরকার। দুই দেশের সরকার চুক্তিটি অনুস্বাক্ষর করার মধ্যে দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনে আরও এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। আর আজকের চুক্তির মধ্যে দিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অর্থ নিশ্চিত হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। অর্থাৎ মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চুক্তি করতে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে রাশিয়া সফররত পাঁচ সদস্যের অন্য প্রতিনিধিরা হচ্ছেনÑঅর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ইআরডি সচিব মেজবাহ উদ্দীন ও অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।
এই বিদ্যুকেন্দ্রের মেয়াদ হবে ৫০ বছর। তবে ৯০ বছর একটানা একই হারে চলতে থাকবে। বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রটি পরিচালনা করবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি বাংলাদেশ’। বিদ্যুকেন্দ্রটির প্রথম পর্যায়ের কাজ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। এরপর পরমাণু চুল্লি তৈরির কাজ শুরু হবে। এরই মধ্যে কেন্দ্রটির নকশা তৈরির কাজ শেষ করেছে এটমস্ট্রয় এক্সপার্ট।
নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই কেন্দ্র করা হবে। এই পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে নিঃসরিত বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে। চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবরে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে এর এক বছর পর দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ অক্টোবরে উৎপাদনে আসবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলে আসছে, এই প্রকল্পে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে তিন টাকা। তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী ও দেশি-বিদেশি পরমাণু গবেষকদের মতে তা আরো বেশি হবে।
প্রকল্পের ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মতিন বলেন, তার হিসাব অনুযায়ী রূপপুরের দুটি ইউনিট স্থাপনে ব্যয় হওয়ার কথা ৯৬০ কোটি (৯.৬ বিলিয়ন) ডলার। রূপপুর প্রকল্পের জন্য পানির টাওয়ার করতে হচ্ছে, মাটি নিম্নমানের হওয়ায় ভূমিকম্প প্রতিরোধে বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। এসব কারণে হয়তো আরও কিছু বেশি ব্যয় হতে পারে। কিন্তু ১২৬৫ কোটি এবং এর সঙ্গে সমীক্ষা পর্যায়ের ব্যয় ৫৫ কোটি ডলারও যুক্ত হবে। অর্থাৎ মোট ব্যয় হচ্ছে ১৩২০ কোটি ডলার।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৬১ সালে, তৎকালীন পাকিস্তান আমলে। কিন্তু তারপর প্রায় ৫০ বছর এ বিষয়ে তেমন কোনো কাজ হয়নি। ২০০৯ সালে এই কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার ২০১০ সালে জাতীয় সংসদে এ-সংক্রান্ত একটি আইন পাস করে।
২০১১ সালের নভেম্বরে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি সই হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে ১৪ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফা রাশিয়া সফরকালে বাংলাদেশের সাথে দশটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিগুলোর অন্যতম হচ্ছে রাশিয়া থেকে এক বিলিয়ন ডলারের (এক হাজার কোটি ডলার) সমরাস্ত্র ক্রয়, পাবনার রূপপুরে দুই হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ।
অন্য খাতগুলো ছিলÑকৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, আইন ও বিচার, সন্ত্রাস মোকাবিলা ও সামরিক সহযোগিতা। ওই সফরে শেখ হাসিনার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের একটি একান্ত বৈঠক হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ-রাশিয়া ঋণচুক্তি সই আজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->